ফাউ ষষ্ঠী

ফাউ ষষ্ঠী
-রীণা চ্যাটার্জী

সুধী,
উৎসবমুখর বাঙালীর আজ আর এক উৎসব- জামাই ষষ্ঠী। কচি, বুড়ো, দামড়া, মেজাজী, বদমেজাজী, কুচ্চুকুরে যেমন জামাই হোক না কেন পঞ্চ ব্যঞ্জন সাজিয়ে মুখের সামনে ধরতে হবে। রীতি- নীতি মেনে বাজার দর হাঁকিয়ে, পকেট ফাটিয়ে খাতির করতে হবে। নাহলেই অসম্মান- শোনাও শ্বশুরের মেয়েকে দু’চার কথা, ও তে কোনো ট্যাক্স লাগে না।
সকাল থেকে উপোস করে, ষষ্ঠীর পুজো করে, হেঁশেল সামলে, বাটা দিয়ে- কুলোর বাতাস মেরে জামাইকে তুষ্ট করে, ব্রতকথা শুনে একটু মিষ্টি-জল বা একবেলা নিরামীষ আহার মা-মেয়ের বা বাপের বাড়ি না যেতে পাওয়া বৌ’টির এই প্রাপ্য।
অথ জামাইষষ্ঠী প্রচলিত কৃষ্টি কথা সমাপ্ত।
কিন্তু এই ষষ্ঠী আজ বহুবছর ধরে জামাইরা ফাউ খেয়ে আসছে- আর মুখ্য উদ্দেশ্য ছেড়ে গৌণ বিষয়টাই বাহুল্যের বাহারে ক্রমশঃ বিকশিত হয়ে চলেছে।
মুখ্য উদ্দেশ্য- সন্তান কামনায় ও সন্তানের মঙ্গল কামনায় মা ষষ্ঠীর আরাধনা। সনাতনী প্রথায় কন্যা সন্তানের বিয়ের পর বাবা-মা কন্যার প্রথম সন্তানের জন্মের আগে তার শ্বশুরবাড়ি যেতেন না। তাই মেয়েকে দেখার জন্য ও সন্তান কামনায় মা ষষ্ঠীর আরাধনার জন্য মেয়েকে পিত্রালয়ে আসার আমন্ত্রণ করতেন। মেয়ের তো একলা আসার অনুমতি নেই, অতএব জামাইয়ের বাবা-মা’র কাছে করজোড়ে নিবেদন, মেয়ে-জামাইকে পাঠিয়ে দেবার।
জামাই যখন, তখন তো তার সাড়ম্বর আপ্যায়ন করতেই হবে। জুড়ে গেল ষষ্ঠীর সাথে জামাইয়ের নাম। তান্ত্রিকতার এক চূড়ান্ত নিদর্শন।

আলাপী মন-এর সকল জামাই, শ্বশুর লেখক ও মা-মেয়ে লেখিকাকে জামাইষষ্ঠীর আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

সকল শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

Loading

Leave A Comment